Advertisement
E-Paper

পুণেতে করোনা-আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছতে তৈরি ‘জুগাড় অ্যাম্বুল্যান্স’

Test1234
শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২২ ১২:১৯
Share
Save

নামাবলি ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। আর্বান নকশাল, টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং, আন্দোলনজীবী, ইত্যাদির পরে সাম্প্রতিকতম সংযোজন: কলমওয়ালা নকশাল। হরিয়ানার সুরজকুণ্ডে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ‘চিন্তন শিবির’ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, বন্দুকধারী অতি-বামদের পাশাপাশি কলমধারী অতি-বামদেরও নির্মূল করা দরকার, তা না হলে দেশের যুবসমাজকে তাঁরা বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করে চলবেন, দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।

যাদৃশী ভাবনা যস্য। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মনন-সঙ্গীরা যে ধারার চিন্তনে অভ্যস্ত, তাতে তাঁদের চিন্তাসমুদ্র মন্থন করে এমন বাণী উঠে এলে বিস্ময়ের কিছু নেই। বিরোধী রাজনীতিক, নিষ্ঠাবান সমাজকর্মী, স্বাধীনচেতা আইনজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিসরে সচেতন ও সক্রিয় নাগরিকরা অনেকেই বলেছেন, সঙ্ঘ পরিবারের শাসকরা যে কোনও প্রতিবাদের প্রতিই অসহিষ্ণু, তাই ক্রমাগত নিজেদের মস্তিষ্ক হাতড়ে এমন সব তকমা আমদানি করে প্রতিবাদীদের দাগিয়ে দেন এবং আক্রমণের নিশানা করে তোলেন, প্রধানমন্ত্রীর নববিধানটিও তারই আর এক নমুনা।বিরোধী মতের প্রতি শাসকদের অসহিষ্ণুতা গত সাড়ে আট বছর ধরেই আসমুদ্রহিমাচল প্রকট! যে প্রধানমন্ত্রী আজ অবধি সংবাদমাধ্যমে কার্যত কোনও যথার্থ প্রশ্নবাচী সাক্ষাৎকারে অবতীর্ণ হননি, তিনি— বিরোধিতা দূরস্থান— ভিন্নমতকে কী চোখে দেখেন সে কথা নতুন করে বলবার কিছুমাত্র প্রয়োজন আছে কি?

In Article Image Alt Text 123

Caption 123

আশির দশকের গোড়ায় তৎকালীন বম্বের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে মিঠুন চক্রবর্তীকে লোকে চিনত ‘গরিবের অমিতাভ বচ্চন’ হিসাবে। ইদানীং অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে নাকি ‘গরিবের নরেন্দ্র মোদী’ বলা হচ্ছে। টেকনোলজিতে দড় প্রজন্ম বলছে, ‘নরেন্দ্র মোদী লাইট’। কেন, তার আপাত দৃশ্যমান কারণটি গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনের হাওয়া ওঠামাত্র টের পাওয়া যাচ্ছে। নরম নয়, বেশ মোটা দাগের হিন্দুত্বের রাজনীতির পসরা নিয়ে নির্বাচনী ময়দানে নেমেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার জন্য বিজেপি কি ২০২৪ অবধি অপেক্ষা করবে? অর্থাৎ, ভারতীয় রাজনীতিতে যে প্রশ্নগুলির উপর বিজেপির একাধিপত্য ছিল, কেজরীওয়াল তার দখল নিতে চান। টাকার মূল্যহ্রাস ঠেকানোর জন্য তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, নোটে লক্ষ্মী-গণেশের ছবি ছাপা হোক।

কেজরীওয়াল বিলক্ষণ জানেন, প্রস্তাবটি একই সঙ্গে হাস্যকর ও ভয়ঙ্কর। বর্তমান শাসকরা ভারতের গা থেকে যতই খুলে নিন ধর্মনিরপেক্ষতার আভরণ, যতই ভারতের ধারণাটি থেকে মুছে দিতে চান সর্বজনীনতার মায়াস্পর্শ, তবুও সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মকে কারেন্সি নোটের গায়ে ছেপে দেওয়ার পরিস্থিতি সম্ভবত এখনও তৈরি হয়নি। কেজরীওয়ালের বিজেপি-তর হতে চাওয়ার চেষ্টাটির মধ্যে হাস্যরসের উপাদান আছে। কিন্তু ভয়ঙ্কর দিকটি হল, বিজেপি-বিরোধী রাজনীতির মুখ হতে চাওয়া কেজরীওয়ালের ভারত সম্বন্ধে শ্রদ্ধার পরিমাণ হিন্দুত্ববাদীদের তুল্য।

কিন্তু, তাঁকে ‘গরিবের নরেন্দ্র মোদী’ হিসাবে চিহ্নিত করার এটাই একমাত্র কারণ নয়। গভীরতর মিলটি হল, অর্থনীতির মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল বস্তুকেও সস্তা রাজনীতির উপজীব্য করে তুলতে তাঁরও বিন্দুমাত্র বাধেনি। নরেন্দ্র মোদী যেমন তাঁর বিরোধী অবতারে অর্থনীতির প্রশ্নগুলিকে লঘুতম স্তরে নামিয়ে এনে রাজনীতির ইট-পাটকেল বানাতেন। জনতার স্মৃতি ক্ষণস্থায়ী, তবুও অনেকের মনে পড়তে পারে, প্রাক্-২০১৪ প্রতিশ্রুতি ছিল, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এলে এক লিটার পেট্রলের দাম চল্লিশ টাকায় নেমে আসবে, ডলারের দামও সেখানেই নামবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}