Advertisement
E-Paper

শয্যা পেতে হাহাকার, ট্রলি আটকেই দীর্ঘ অপেক্ষা রোগীদের

তিনি দিন কয়েক হল এসেছেন। শয্যা নেই, তাই তাঁর ভাই ট্রলিতেই থাকার ব্যবস্থা করেছেন।

রাতুল সরকার

রাতুল সরকার

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:০০
Share
Save

এসএসকেএমের কার্ডিয়োলজি বিভাগের কাছেই তৈরি হয়েছে নতুন টিকিট কাউন্টার। তার পাশেই গাড়ির ভিড় থেকে মাঝেমধ্যে মাথা তুলছেন দুই ব্যক্তি। সম্প্রতি এমন দৃশ্য দেখে কাছে যেতে দেখা গেল, ট্রলিতে শুয়ে রয়েছেন তাঁরা। এখানে শুয়ে কেন? উত্তর নেই!

প্রশ্নটা আবার করতেই টিকিট কাউন্টারের গা ঘেঁষে থাকা ট্রলির যুবক বললেন, ‘‘এক মাস ধরে তো এখানেই আছি।’’ পাশের জনের দাবি, তিনি দিন কয়েক হল এসেছেন। শয্যা নেই, তাই তাঁর ভাই ট্রলিতেই থাকার ব্যবস্থা করেছেন। ওই ভাবে দু’জনকে ট্রলি আটকে রাখতে দেখে অন্য রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, ‘‘মাঝেমধ্যেই শোনা যায়, হাসপাতালে ট্রলি পাওয়া যাচ্ছে না। রোগীকে ওয়ার্ড থেকে অন্যত্র নিতেও অনেক সময়ে ট্রলি মেলে না। সেখানে ওঁরা কী ভাবে ট্রলি আটকে রয়েছেন? কর্তৃপক্ষের নজর রাখা উচিত।’’

নজরদারিতে যে খামতি রয়েছে, তা বোঝা যায় টিকিট কাউন্টারের গা ঘেঁষে থাকা যুবক আবির আলি শাহের কথাতেই। তাঁর দাবি, কোমরে চোট লেগেছে। তাই বাগনান থেকে দিদি নিয়ে এসেছিলেন এসএসকেএমে দেখাতে। কিন্তু তা নাকি হয়নি! আর তাই কাউন্টারের গ্রিলের জানলায় প্লাস্টিকের ছাউনি টাঙিয়ে, নিজের ব্যাগপত্রও ঝুলিয়ে রেখেছেন তিনি। পাশের জন তারিকুল ইসলামের দাবি, ‘‘ঠিক মতো হাঁটতে পারছি না। আড়াই হাজার টাকা গাড়িভাড়া দিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে এসেছি। ডাক্তারবাবুরা কিছু পরীক্ষা করাতে বলেছেন। কত বার আর যাতায়াত করব। এত টাকা নেই।’’

কিছুটা এগিয়ে বহির্বিভাগের নতুন ভবনের সামনে দেখা গেল, ট্রলিতে শুয়ে আরও এক যুবক। পরিজনেরা সামনেই প্লাস্টিক বিছিয়ে বসে রয়েছেন। ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ৩৫ বছরের ওই যুবকের নাম নিখিল মণ্ডল। দিনমজুরের কাজ করেন। বললেন, ‘‘আচমকাই পেট ফুলে যেতে শুরু করেছে। কোমর থেকে পায়ের দিক ক্রমশ সরু হয়ে যাচ্ছে। ঠিক মতো হাঁটতে পারি না। পেটেও ব্যথা হয়। খেলেই বমি পায়। অনেক কষ্ট করে কলকাতায় দেখাতে এসেছি।’’ শয্যা না মেলায় হাসপাতালেই থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তাঁর পরিজনেরা। কাকা সীতারামের কথায়, ‘‘দিনমজুরের কাজ করি। দৈনিক ১৫০-২০০ টাকা মজুরি পাই। ধারদেনা করে ট্রেনে চেপে কলকাতায় নেমে ট্যাক্সি নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। একেবারে চিকিৎসা করিয়ে তবে বাড়ি যাব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}