E-Paper

বিক্রি কমছে, তবে ভিড় নয়

পুজোর বাজারে এ দিন আরামবাগে পোশাক, জুতো, মোবাইল ফোন, ইমিটেশনের অলঙ্কারের দোকানগুলিতে ভিড় ছিল।

অসচেতন: রবিবার ছুটির দিনে পুজোর কেনকাটার ভিড়। ছবি: তাপস 

অসচেতন: রবিবার ছুটির দিনে পুজোর কেনকাটার ভিড়। ছবি: তাপস 

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ০২:১০
Share
Save

সংক্রমণের নিরিখে রোজই রাজ্যে করোনা তার নিজের রেকর্ড ভাঙছে। তবে রবিবার পুজোর বাজারে ভিড় দেখে তা বোঝার কোনও উপায় ছিল না। যদিও খুশি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, করোনা-পরিস্থিতিতে ব্যবসায় যতটা মন্দা তাঁরা আশঙ্কা করেছিলেন, বাস্তবে ততটা হয়নি।

শহর হোক বা মফস্সল—পুজোর দিন যত এগিয়ে আসছে কোনাকাটায় ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন ক্রেতাদের একাংশ। পুজোর আগে দ্বিতীয় শেষ রবিবার ছিল এ দিন। উত্তরপাড়া থেকে আরামবাগ, সর্বত্রই বাজারে ছিল উপচে পড়া ভিড়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের একাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। আর দূরত্ব-বিধি মানার সামান্যতম চেষ্টাও তাঁদের মধ্যে দেখা যায়নি।

করোনা-আবহে এ বছর ব্যবসায় যতটা মন্দার আশঙ্কা করেছিলেন ব্যবসায়ীরা, ততটা হয়নি বলে জানাচ্ছেন আরামবাগ শহরের ব্যবসায়ীদের একাংশ। সারাদিনই পোশাক ও জুতোর দোকানগুলিতে ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে এ দিন। লকডাউন এবং আমপানের কারণে বেচাকেনা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমেছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। রামকৃষ্ণ সেতু সংস্কারের ফলে গোঘাটের খদ্দের কম আসছেন আরামবাগে। তাঁরা কামারপুকুরেই বেচাকেনা সারছেন।

পুজোর বাজারে এ দিন আরামবাগে পোশাক, জুতো, মোবাইল ফোন, ইমিটেশনের অলঙ্কারের দোকানগুলিতে ভিড় ছিল। আরামবাগ শহরের বড় বস্ত্র ব্যবসায়ী শক্তিসাধন গুপ্তা বলেন, “এ বার বাজারের হাল খুবই খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করেছিলাম। বাজার ততটা খারাপ নয়। আমাদের কাউন্টারে গত বারের চেয়ে ২০-২৫ শতাংশ কম বিক্রিবাটা হচ্ছে। এ বছর পর্যাপ্ত মাল সরবরাহ নেই। সেটাও কম বেচাকেনা হওয়ার একটা কারণ।” আরামবাগ শহরের মাঝারি ব্যবসায়ী নবকুমার মণ্ডলের দাবি, “অন্য বছর পুজোর আগের দু’সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ হাজার টাকা এবং রবিবার ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি সামগ্রী বিক্রি হত। এ বার গড়ে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এই পরিমাণ বিক্রি হবে, তা আশা করিনি।” গতবারের তুলনায় এখনও পর্যন্ত বিক্রি ৫০ শতাংশ কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিসি সেন রোডের রূপসজ্জার সামগ্রীর ব্যবসায়ী শঙ্কর মণ্ডল এবং আন্দিমহল্লার জুতো ব্যবসায়ী আকাশ চৌধুরী।

তবে এখনও ব্যবসা তেমন জমেনি সেলুন-বিউটি পার্লারের। হাসপাতাল রোডে একটি সেলুনের মালিক সুপ্রিয় দত্ত বলেন, “গত বছর পর্যন্ত পুজোর আগের দুই সপ্তাহে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন কাস্টমার সেলুনে আসতেন। নাওয়া-খাওয়ার সময় মিলত না। এখন প্রতিদিন গড়ে ২০ জন থেকে ২৫ জনের বেশি আসছেন না।” শহরের বড় মোবাইল দোকানগুলির মধ্যে নেতাজি স্কোয়ার সংলগ্ন আমিরুল ওরফে তোতন তরফদার বলেন, “গতবারের চেয়ে ৬০ শতাংশ বিক্রি কম হয়েছে এখনও পর্যন্ত।”

এ দিন অবশ্য উলুবেড়িয়া ও বাগনানে পুজোর বাজারের চিত্রটা অন্যরকম ছিল। তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। তবে সেখানেও মাস্ক না-পরে কেনাকাটার ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। উলুবেড়িয়ার ব্যবসায়ী সিদ্ধার্থ দাস বলেন, ‘‘গত বছর এই সময়ে খাওয়া-দাওয়ার সময় পেতাম না। এ বছর বাজার ভাল নয়।’’

বাগনানের ব্যবসায়ী সিরাজুল মোল্লা বলেন, ‘‘গত বছর যা ব্যবসা করেছিলাম, এ বছর তার অর্ধেক হবে বলেও মনে হচ্ছে না। লকডাউন কেটে গেলেও সব কিছু স্বাভাবিক হয়নি এখনও। অনেক টাকা দেনা করে মাল তুলেছি। বিক্রি না হলে অনেক টাকা ক্ষতি হবে।’’

পান্ডুয়ার হাটতলা, কালনা মোড় এবং স্টেশন রোডের শপিং মল এবং বাজারে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে এ দিনও বাজারে মাস্ক না-পরা বহু ক্রেতার দেখা মিলেছে। পুজোর বাজার করতে আসা কুলটি রোডের বাসিন্দা সৌভিক দাস বলেন, ‘‘সরকার যতই মাস্ক বা স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করার আবেদন করুক না কেন, অনেকেই তা নামছেন না। আমরা কয়েকজন, যারা মাস্ক ব্যবহার করি, তাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’’ পান্ডুয়ার একটি শপিং মলের সামনে গলায় মাস্ক ঝুলিয়ে ঘুরছিলেন বাগিলা থেকে আশা সুমন্ত মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘‘মুখে সব সময় মাস্ক রাখা যায় না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Puja Bazaar gathering Arambagh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

SAVE 29%*
এক বছরে

১১৯৯

১১৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

১৪৯

১২৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।