বিশ্বকাপ ফাইনালে ব্যর্থতার পর ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বোর্ডকর্তারা। সেখানে জয় শাহদের কড়া প্রশ্নবাণ সামলাতে হয়েছে তাঁদের। পাল্টা তাঁরাও জিজ্ঞাসা করেছেন, আগামী দিনের পরিকল্পনা কী? রোহিত সরাসরি বোর্ডকর্তাদের প্রশ্ন করেছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁকে অধিনায়ক রাখা হবে কি না। তা হলে সেই মতো প্রস্তুতি শুরু করবেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হবে আগামী ৪ জুন থেকে। অর্থাৎ এখনও ছ’মাস বাকি।
এক সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোহিত সব নির্বাচক এবং বোর্ডকর্তাদের জিজ্ঞাসা করেন যে পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁকে নেতৃত্বে রাখা হবে কি না। ওই বৈঠকে থাকা এক বোর্ডকর্তা বলেছেন, “রোহিত জিজ্ঞাসা করেছে, যদি আপনারা আমাকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নেতৃত্বে রাখার জন্য সঠিক বলে মনে করেন, তা হলে এখন থেকেই বলে দিন। সেই মতো প্রস্তুত হওয়া যাবে।”
দ্রাবিড়, নির্বাচকেরা-সহ বৈঠকে যাঁরাই ছিলেন তাঁরাই একবাক্যে রোহিতের নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন জানান। তাঁরা বলে দেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রোহিতই যোগ্যতম ব্যক্তি। এমনকি নির্বাচকেরা তাঁকে অনুরোধ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সাদা বলে সিরিজ়েও খেলতে। কিন্তু রোহিত রাজি হননি। তিনি নির্বাচকদের কাছে আরও একটু সময় চেয়ে নেন। নির্বাচকেরা তাতে অনুমতিও দেন।
এর পরে সূর্যকুমার যাদবকে দক্ষিণ আফ্রিকাগামী টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এক দিনের ক্রিকেটের দায়িত্ব পান কেএল রাহুল। হার্দিক পাণ্ড্যের চোট না থাকলে হয়তো তিনিই টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিতেন।
পশ্চিমবঙ্গে যে কোনও প্রচারের মঞ্চে বা ময়দানে, বিজেপির নেতানেত্রীরা কার্যত তুলনারহিত। তাঁদের আহ্বানে ও আস্ফালনে গঠনমূলক কথা অত্যন্ত বিরল, সমস্ত উত্তাপ কেবল বিধ্বংসী আস্ফালন থেকেই উৎসারিত হয়, তার সঙ্গে যুক্ত হয় বিদ্বেষ ও বিভাজনের মন্ত্রপাঠ। অমিত শাহের সাম্প্রতিক ভাষণেও সেই একই ঐতিহ্য অনুসৃত হয়েছে। তিনি বাঁধা গতের অঙ্গভঙ্গি সহকারে পরিচিত হুঙ্কার দিয়েছেন, সংখ্যাগুরু ভোট আকর্ষণের লক্ষ্যে সিএএ প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন, কিন্তু কোনও সুষ্ঠু কার্যক্রমের আভাস তাঁর কথায় মেলেনি, এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির সমালোচনাতেও বস্তাপচা কিছু চিৎকার ছাড়া আর কিছুই শোনাতে পারেননি। শোরগোলের রাজনীতিতে ইন্ধন জোগানোই তাঁর লক্ষ্য ছিল, সেই লক্ষ্য পূরণ করে স্বস্থানে প্রস্থান করেছেন। দলের লোকেরাও নতুন উদ্যমে শোরগোল তুলতে বিধানসভার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
শাসক দলের সদস্যরাও শোরগোলের রাজনীতিতেই পরম আগ্রহী। অতএব বিধানসভা ভবন দুই তরফের দ্বৈরথের রণভূমিতে পরিণত হয়েছে। সংসদীয় রাজনীতির প্রধান প্রতিষ্ঠানটিকে সামনে রেখে অশোভন আচরণের যে কদর্য প্রতিযোগিতা দেখা গিয়েছে, তা দুই শিবিরের পক্ষেই চরম অমর্যাদার এবং রাজ্যের পক্ষে চরম লজ্জার। ‘চোর’ বনাম ‘পকেটমার’ গোত্রের গালি বিনিময় থেকে শুরু করে এক পক্ষের উপস্থিতিতে ‘অপবিত্র’ ভূমিতে অন্য পক্ষের গঙ্গাজল ছড়িয়ে ‘শোধন’ করার উৎকট উদ্যোগ, বিরোধী দলনেতাকে বিধানসভায় সাসপেন্ড করা, তার প্রতিবাদে বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত— এই নিম্নস্তরের কলহ রাজ্য রাজনীতিকে আরও বেশি অসুস্থ করে তুলছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশকে উত্তরোত্তর দূষিত করছে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের মৌলিক ক্ষতি হচ্ছে। যেমন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে এই উদ্দেশ্যে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি সেই আমন্ত্রণ সপাটে প্রত্যাখ্যান করেছেন, কারণ বৈঠকে গেলে আর মুখ্যমন্ত্রীকে বয়কট করা হয় কী করে? অর্থাৎ, দলীয় সংঘাতই আসল, গণতান্ত্রিক রীতি ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ গৌণ। শাসক এবং বিরোধী, দুই পক্ষই নেতিবাচক এবং বিধ্বংসী রাজনীতির একনিষ্ঠ সেবক হলে যা ঘটবার, পশ্চিমবঙ্গে তা-ই ঘটছে।