উত্তর কলকাতায় সেরা পুজোর তালিকায় এগিয়ে রয়েছে কারা? দেখে নিন সেরা কয়েকটি পুজো:
টালা সরকার বাগান
দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আমরা এ বার একশো। এ বারের থিম ‘শুদ্ধং দেহি’। পুজো মানে তো অশুভ শক্তির বিনাশ। সেই ভাবনারই প্রতিফলন থাকবে মণ্ডপে। রোজকার ব্যবহৃত ঝাড়ু, ব্রাশ ইত্যাদি দিয়ে মণ্ডপসজ্জা। প্রবেশপথের দু’ধারে থাকছে ১০০ ফুট দীর্ঘ পাঁচিল। তার উপরেও থিমের সঙ্গে মানানসই কারুকাজ থাকবে। থাকবে বেশ কিছু মডেল। প্রতিমা সাবেক। প্রতিমার পিছনে থাকবে ব্রাশের কাজ। থিম শিল্পী অমিত আর অরিন্দম। প্রতিমাশিল্পী সনাতন পাল।
টালা পার্ক প্রত্যয়
দেখতে দেখতে ৯২ বছর পেরোলাম। তবে থিম পুজোয় এটা দ্বিতীয় বছর। আমাদের মন যা চায়, সব সময়ে তা পায় না। কিন্তু এই পুজো সেই অপূর্ণ সাধ পূরণ করবে। স্বর্গের দেখা মিলবে এখানে। মণ্ডপ তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে কাপড়, রেক্সিন, প্লাস্টিকের পাইপ। শান্তিরূপে প্রতিমা। আলোকসজ্জায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ত্রিমাত্রিক আলোর বিচ্ছুরণ থাকবে গোটা পুজো প্রাঙ্গণ জুড়ে। থিম শিল্পী দেবাশীষ বারুই। প্রতিমা শিল্পী সুব্রত মৃধা।
বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব
মা দুর্গা এখানে শক্তির আধার। রঙিন কাপড়, সুচ, সুতো এবং আয়নায় সাজবে মণ্ডপ। এমব্রয়ডারি এবং অ্যাপ্লিকের কাজ থাকছে সারা মণ্ডপ জুড়ে। বাইরে সুতোয় বোনা থাকবে ১০০ দেবদেবীর মূর্তি। প্রতিমা এখানে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে। যান্ত্রিক ঘূর্ণন থাকছে প্রতি দেবদেবীর পিছনে। আলোকসজ্জায় প্রাধান্য পাবে মাটির প্রদীপ এবং ল্যাম্প।

(১) টালা সরকার বাগান সম্মিলিত সঙ্ঘ
(২) টালা পার্ক প্রত্যয়
(৩) বেলগাছিয়া সাধারণ দুর্গোৎসব
(৪) টাল্লা পল্লি সাধারণ দুর্গোৎসব সমিতি
(৫) শ্যামবাজার পল্লি সঙ্ঘ
(৬) মোহনবাগান বারোয়ারি
(৭) এক নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ
দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনী (জগৎ মুখার্জি পার্ক)
(৬) মোহনবাগান বারোয়ারি
(৭) এক নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ
দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনী (জগৎ মুখার্জি পার্ক)
(৮) কুমোরটুলি সর্বজনীন
(৯) কুমোরটুলি পার্ক
(১০) শিকদার বাগান সাধারণ দুর্গোৎসব
(১১) হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি
টাল্লা পল্লি সাধারণ সমিতি
৭০তম বর্ষের পুজো। জাগতিক সুখের পিছনে ছুটতে গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে শান্তি। পাঁচশো-হাজার টাকার নোট এক রাতের ঘোষণায় বাতিল হচ্ছে। টাকা দিয়ে জীবনের শান্তি বা আনন্দ কেনা যায় না। সেই বার্তাই থাকবে পুজোয়। মানবশিশুর পরিবর্ত হিসেবে শিশু-কাকতাড়ুয়া থাকবে এখানে। রং, তুলি, কাট-আউট আর শব্দে উঠে আসবে ব্যস্ত শহর-জীবন। সিংহরূপী আসনে বসা সাদা শাড়ি পরিহিতা সাদা রঙের প্রতিমা। অসুর ধ্যানরত। প্রতিমা শিল্পী কৌশিক পাল।
শ্যামবাজার পল্লি সঙ্ঘ
৫৭তম বর্ষের থিম ঐতিহ্যের বাতায়নে নতুনের জয়গান। যে পটচিত্র এক দিন ছিল বাংলার গৌরব, আজ তা লুপ্তপ্রায়। মণ্ডপে তুলে ধরা হবে হারিয়ে যেতে বসা সেই শিল্পকে। প্রবেশপথের দু’ধারে মোটিফে ফুটিয়ে তোলা হবে নবান্ন উৎসব, বৃক্ষরোপণ। সাবেক প্রতিমার শিল্পী নবকুমার পাল। মানানসই আলোকসজ্জা।
মোহনবাগান বারোয়ারি
থিমের দৌড়ে পা মেলানো নয়, আমরা বিশ্বাসী সাবেক পুজোয়। সেই ধারা মেনে ১০১তম বর্ষে প্রতিমা ডাকের সাজের। সনাতন রুদ্র পাল তৈরি করছেন ১৩ ফুট উঁচু প্রতিমা। থাকছে আলোর দু’টি গেট। মণ্ডপ সাজানো হবে হ্যালোজেন ও টুনিতে।
জগৎ মুখার্জি পার্ক
৮১তম বর্ষে আমরা দেখাব জলের নীচের জগৎ। কাঠের পালতোলা জাহাজের আদলে তৈরি মণ্ডপে প্রবেশ করবেন দর্শকেরা। এর পরেই তাঁরা ঢুকে যাবেন সাবমেরিনে। মণ্ডপে থাকছে জলমহলের পরিবেশ। এক ঝলক দেখলে মনে হবে দুর্গাও ভাসমান। প্রতিমার পোশাক তৈরি করছেন তেজষ গাঁধী। মানানসই আবহসঙ্গীত এবং আলো থাকছে।
কুমোরটুলি সর্বজনীন
বিসর্জনের পরেও মা খুঁজে বেড়ান তাঁর সৃষ্টিকর্তাকে। সেই ভাবনাকে মাথায় রেখে এ বার আমরা স্মরণ করব কুমোরটুলির প্রয়াত শিল্পীদের। ৮৬তম বর্ষে আমাদের থিম তাই ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’। বাঁশ, খ়ড়, কাঠামো, রঙের পুঁটলি, গয়না প্রভৃতি জিনিস দিয়ে সাজছে মণ্ডপের ভিতর ও বাহির। কুমোরের ঘর থেকে দেবীরূপী মেয়ের যাত্রা শুরু সর্বজনীন হতে। সেই পরিবেশ মণ্ডপের ভিতরে তুলে ধরতে একটি কাঠের লরিতে থাকবে প্লাস্টিকে মোড়ানো প্রতিমা ও কিছু কাঠামো। সমগ্র ভাবনা ও বিন্যাসে শিল্পী পরিমল পাল।
কুমোরটুলি পার্ক
২৫তম বর্ষের পুজোয় থাকছে সবুজায়নের বার্তা। বৃন্দাবনের একটি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। প্রতিমা শিল্পী গোরাচাঁদ পাল। শিল্পীর ভাবনায় এই প্রতিমাই হবে বিশ্বসুন্দরী। সাযুজ্য রেখে হবে এলইডি আলোর ব্যবহার।
শিকদার বাগান
এ বার আমাদের ১০৫ বছর। ভাবনায় পরিবেশ সচেতনতা— থাকুক সৃষ্টি, বাঁচুক প্রাণ। চাঁচারি, বাঁশ, হোগলা পাতা দিয়ে সাজছে মণ্ডপ। একচালার প্রতিমায় থাকবে বাঁশের কাজ। আলোকসজ্জায় বাঁশের ছোঁয়া।
হাতিবাগান সর্বজনীন
৮৩ বছরে পড়ল আমাদের পুজো। এ বার আমাদের ভাবনায় লোকশিল্প। থিমের নাম উড়ান। বারাণসীর বিশেষ লোকশিল্পের ব্যবহার থাকবে। ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মৃন্ময়ী প্রতিমা। থিমের ছোঁয়া থাকবে এলইডি আলোয়। খড় ও প্লাস্টার অব প্যারিস ব্যবহার হবে মণ্ডপে। থিম শিল্পী দেবজ্যোতি জানা। আবহসঙ্গীতে জয় সরকার।