গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য ‘গুগ্ল ম্যাপ’ই ভরসা। তাই গাড়িতে উঠে মোবাইলে ঠিকানা দিয়ে সেই ম্যাপ অনুসরণ করেই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তরুণ। কিন্তু গুগ্ল ম্যাপকে বিশ্বাস করেই বিপদ ডেকে আনলেন তিনি। গাড়ি নিয়ে সোজা ৩০ ফুট গভীর নর্দমায় ডুবে গেলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করালেও শেষরক্ষা হল না। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তরুণ।
ধাক্কা খেতে খেতে এগিয়ে চলো। এখানেও তেমন। অবশ্য, সোমবারের রোলঁ গ্যারোজ়ে যে দ্বৈরথ ছিল তাকে টেনিসের ভারত-পাক মহারণ বলা যেতেই পারে। । ক্লে কোর্টের রাজা রাফার দুর্গে আধুনিক টেনিস সম্রাটের নেমন্তন্ন।
- উইম্বলডনে যেমন সেন্টার কোর্ট, রোলঁ গ্যারোজ়ে তেমন ফিলিপ শাতহিয়ে (ফরাসিরা উচ্চারণ করেন ফিলিপ শাতহ্রিয়ে)।
- শ্রদ্ধা, সম্ভ্রম, ইতিহাসের বিচারে সেন্টার কোর্টের পাশাপাশি থাকতেই পারে।
- রাফায়েল নাদাল যে এখানকার ক্লে কোর্টের অবিসংবাদী রাজা, রাস্তা ধরে রোলঁ গ্যারোজ়ের দিকে এগোতে থাকলেই বোঝা যাবে। প্যারিসে আসার পরে এ দিনই সব চেয়ে কড়া রোদ দেখা গেল।
- সঙ্গে তিরিশ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা। অনেকে হাতপাখা নিয়ে এসেছেন। কিন্তু অসহ্য গরমকে উপেক্ষা করে সকলে এগিয়ে চলেছেন প্রিয় রাজার দর্শন নেবেন বলে।
ঘটনাটি শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ গ্রেটার নয়ডায় ঘটেছে। মৃত তরুণের নাম ভরত ভাটি। দিল্লির বাসিন্দা ভরত পেশায় স্টেশনমাস্টার ছিলেন। সমাজমাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে তাঁর গাড়ি উদ্ধারের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে
এত তফাত দু’টোর মধ্যে যে, মনে হবে একটা সাদা-কালো টিভির পুরনো দুনিয়া। অন্যটা ঝকঝকে রঙিন টিভির আধুনিক বিশ্ব। সোমবারের রোলঁ গ্যারোজ় রঙিন টিভির জগৎ। কে বলবে অলিম্পিক্সের ভবিষ্যৎ নিয়ে টানাটানি চলছে? প্রশ্ন উঠেছে, গেমসের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখা যাবে কি না। কয়েক দিন আগেও কয়েকটি সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে, গেমসের অনেক ইভেন্টের টিকিট পড়ে আছে। কেউ কিনছে না। কিন্তু সোমবার রোলঁ গ্যারোজ়ে এত ভিড় যে, মনে হচ্ছিল নতুন কোনও আইফেল টাওয়ার কি বসানো হল নাকি এখানে? যা দেখতে এত মানুষ ছুটে এসেছে!
ইডেনে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থাকলে কী গলদঘর্ম অবস্থা হয়, কল্পনা করুন। টিকিট হাতে রাস্তা দিয়ে চলতে থাকুন, কোন গেট দিয়ে ঢুকতে হবে তা গুলিয়ে যায়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ।
- কিন্তু আজ যে অন্য রকম আবেগের বিস্ফোরণ ঘটার দিন ছিল।
- ক্লে কোর্টের রাজা তাঁর দুর্গে সম্ভবত শেষ বার সিঙ্গলস খেলতে নামছেন।
- না হোক গ্র্যান্ড স্ল্যাম, বুকে পাথর চাপা দিয়ে আজ যে বিদায়ের ঘণ্টা শোনার দিন!
- কে জানে, যদি আর দেখতে না পাই? সেই কারণেই রোলঁ গ্যারোজ়ের ফিলিপ শাতহিয়ে কোর্ট, যেখানে বহু মহাকাব্য লিখেছেন নাদাল, তা এমন একপেশে সমর্থনে ভরিয়ে দিল তাঁকে।
ফেডেরারের কথা মনে পড়তে পারে। আর প্রতিপক্ষও তো যেমন তেমন কেউ নন। টেনিসের ইতিহাসে পুরুষদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি, ২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম-জয়ী নোভাক জোকোভিচ। আরও আশ্চর্য লাগছিল দেখে যে, সোমবার তো ফরাসি ওপেন গ্র্যান্ড স্ল্যামের ম্যাচ ছিল না। ছিল অলিম্পিক্সের দ্বৈরথ, যাকে পেশাদার টেনিস পৃথিবী পাত্তাই দেন না। জোকোভিচই যেমন ২৪টা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেও ট্রফি আলমারিতে একটা ব্রোঞ্জ (২০০৬ বেজিং) ছাড়া সোনার পদক নেই।
আরও পড়ুন:
তা নিয়ে এত দিন ধরে তাঁর রাতের ঘুম নষ্ট হয়েছে বলে শোনা যায়নি। নাদালের ঘরে আছে একটি অলিম্পিক্স সোনার পদক। এ বারে অবশ্য জোকোভিচ বলেছেন, এই শূন্যতা মেটাতে চান।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)