‘‘দলিত মেয়ে পুড়ছে, কৃষক মা কাঁদছে।’’ শুক্রবার কোচবিহার সাগরদিঘি পাড়ে এমনই ব্যানার সঙ্গে নিয়ে মাথায় কালো কাপড় বেঁধে মিছিল করল তৃণমূলের মহিলা সংগঠন। চলল অবস্থান- বিক্ষোভও। জেলার প্রায় সব জায়গা থেকে মহিলাদের ওই অবস্থানে হাজির করিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। সেই সঙ্গে সংগঠনের নির্দেশ, আগামী সাতদিন ব্লকে ব্লকে হাথরসের ঘটনা নিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানাবেন তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের সদস্যরা। বিজেপিও অবশ্য বসে নেই। দলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, উত্তরবঙ্গে যখন একের পর এক মেয়ে নির্যাতিত হল, খুন হল তখন এই প্রতিবাদ কোথায় ছিল। মহিলা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভানেত্রী শুচিস্মিতা দেবশর্মা বলেন, “দেশে তথা বিজেপিশাসিত রাজ্যে পর পর ঘটনা সবাইকে আতঙ্কিত করে তুলছে। এর জোরালো প্রতিবাদ হওয়া উচিত। আমরা সেটাই করছি।”
হাথরস-কাণ্ড নিয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন কিছুদিন থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েদের দিয়ে অনলাইনে লাইভ অনুষ্ঠানে করছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করছেন শাসকদলের মহিলারা। আন্দোলন গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই অবস্থায়, কৃষক বিল নিয়ে মিছিল করলেও হাথরস-কাণ্ডের পাল্টা প্রচার নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। উত্তরবঙ্গে বিজেপির সংগঠন অনেকটাই শক্তিশালী। এই এলাকা থেকে বিধানসভা নির্বাচনে ভাল ফল নিয়ে আশাবাদী তারা। তাই উত্তরবঙ্গেরই কিছু ঘটনা সামনে এনে প্রচার করতে চাইছে তারা। ইতিমধ্যে ওই ঘটনাগুলি নিয়ে বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু প্রচার হয়েছে। ধারাবাহিক ভাবে ওই প্রচারে গুরুত্ব দিতে চাইছে দল।
বিজেপি সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে দিন দশেকের মধ্যে কোচবিহার আসবেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি একাধিক কর্মসূচিতে যোগদান, জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন। রাজ্য বিজেপির নেতা সায়ন্তন বসুও আসতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা সেরে কর্মসূচি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চায় বিজেপি। বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “রাজ্যে পর পর নারী নির্যাতনের ঘটনায় মানুষ ক্ষুব্ধ। সারা রাজ্যে অপশাসন চলছে। দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতেই তৃণমূল এমন প্রচারে নেমেছে। তাতে লাভ হবে না।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)